লক্ষ্মীপুরে অপহরণের পর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে রিয়াজ হোসেন (২৫) নামে এক ফার্নিচার কারিগরকে হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন মান্দারী ইউনিয়নের মান্দারী পূর্ববাজার এলাকার উম্মে সালমা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে দুদিন পর অপহূত ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ। নিহত রিয়াজ দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা গ্রামের মোহাম্মদ উল্যা মেকারের বাড়ির তোফায়েল আহমেদ দুলালের ছেলে ও মান্দারী বাজারের দ্বীন ইসলাম ফার্নিচার দোকানের নকশার কারিগর তিনি।
পুলিশ জানায়, এরআগে মঙ্গলবার রাতে দোকান থেকে বের হওয়ার পর সে নিখোঁজ হয়। গত বৃহস্পতিবার রিয়াজের মোবাইলফোন থেকেই অপহরণকারীরা কল দিয়ে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে। একইদিন সন্ধ্যায় নিহতের মা’ খুরশিদা বেগম চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এর প্রেক্ষিতেই তদন্ত শুরু করে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনাটি থানা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য র্যাবের কাছে সহযোগীতা চাওয়া হয়। পরে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মান্দারী বাজারের একটি ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে রিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এনিয়ে এসপি মাহফুজ্জামান আশরাফ এক স্ট্যাটাস পোস্ট করেন জেলা পুলিশের ফেসবুক আইডিতে। সেখানে বলা হয় একটি বড় বিল্ডিংয়ের নিচতলা করিডোর দিয়ে পেছনের একটি কক্ষে ঢুকে রিয়াজের মরদেহ দেখা যায়। মরদেহ উপুড় হয়ে পড়ে থাকায় মুখ দেখা যাচ্ছিল না। তার হাত-পা বাধা ছিল। খাটের উপর জাজিম রক্তে মাখা ছিল। তার মুখমন্ডলসহ শরীরেও রক্ত ছড়িয়ে ছিল। দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছিল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রিয়াজের বড় ভাই রুবেলের সঙ্গে মান্দারী বাজারে একটি ফার্নিচারের দোকানে নকশার কারিগর হিসেবে কাজ করতো। তার সঙ্গে কাউছার নামে আরও একজন নকশার কারিগর ছিলেন। কাউছার বাজারের পাশেই উম্মে সালমা ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতো। সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের ধারণা ঘটনার সঙ্গে কাউছার জড়িত রয়েছে।
নিহতের বাবা তোফায়েল আহমেদ বলেন, দুদিন আগে আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়। পরে তার মোবাইল থেকেই কল দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। ওই টাকা না দেওয়ায় অপহরণকারীরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই মো. আবদুর রহিম জানান, নিহতের মায়ের অভিযোগ পেয়ে র্যাবের সহযোগীতা নিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা তদন্ত শুরু করেন। এরপর জানা যায়, দুই মাস আগ থেকে উম্মে সালমা ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতো। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।
টিএইচ